Sunday, June 5, 2011

পারিবারিকতা


পরিবার বাচলে সমাজ বাচবে, সমাজ বাচলে দেশ বাচবে, দেশ বাচলে সভ্যতা বাচবে

মানব ইতিহাসের প্রাচীনতম ও সংখ্যায় পৃথিবীর বৃহত্তম সংগঠন এবং সমাজ গঠনের মৌলিক একক হচ্ছে পরিবার। মানব সভ্যতার ক্রমযাত্রায় পরিবার সবচেয়ে বিশ্বস্ত সংগঠন। কিন্তু আমাদের সামাজিক বিবর্তনে সচেতন ভাবে সংগঠন হিসাবে পরিবারকে কখনোই মূল্যায়ন করা হয়নি, সংগঠন হিসাবে পরিবারের সম্ভাবনা নিয়ে তেমন পাঠন হয়নি, সমাজ বিজ্ঞান চর্চা ব্যক্তি ও সমষ্টির তুলনায় পরিবারের সাথে বিমাতা সুলভ আচরণ করেছে, যদিও মানব গোষ্ঠী আসলে পরিবারের সমষ্টি মাত্রসমাজ কাঁঠালের মত পরিবারের যৌগিক ফল।
কিন্তু আমাদের রাষ্ট্র সভ্যতার বর্তমান কাঠামোতে ব্যক্তি ও সমষ্টির যত গুরুত্ব পরিবারের গুরুত্ব ততোধিক কম। ব্যক্তি স্বাতন্ত্রবাদের জোয়ারে পরিবারের সাংগঠনিক ভিত্তি ও প্রভাব এখন খুবই দুর্বল। তাই পারিবারিক বন্ধন এখন ক্ষয়িষ্ণুফলে অবধারিত ভাবে পারিবারিক টেনশন বৃদ্ধি পেয়েছে যা সমভাবে সমাজকে প্রভাবিত করেছে। আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে হতাশা বেড়েই চলেছে, আর কমছে স্বস্তি ও সুখমানুষ দিনে দিনে বড় বেশী একা হয়ে যাচ্ছে, যার প্রতিফলন ঘটছে জাতীয় জীবনেও, ঐক্য মতের বড়ই অভাব। আর এ সব কিছুর মূলে রয়েছে পরিবার  নামক আদিমতম সংগঠনটির ক্রমবর্ধমান অকার্যকারিতাকোন এক অজ্ঞাত কারণে সমাজ বিজ্ঞান এ বিষয়ে বড়ই উদাসীনআর এজন্যই পৃথিবীর প্রথম সংগঠন অবৈধ, কারণ এখনো এর কোন প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি নাই। সভ্যতার শুরু যে সংগঠনটিকে কেন্দ্র করে সর্বত্রই তার ভিত্তি ক্ষয়িষ্ণু, পারিবারিক বন্ধন সবল হবার মত সামাজিক পরিকাঠামো সংরক্ষণ ও বিনির্মানে মনযোগী না হওয়ায়।
প্রকৃত উন্নয়নের জন্য দরকার আমাদের সংসারের উন্নতি পরিবার হচ্ছে সমাজের বনসাই আর পরিবারের প্রাতিষ্ঠানিক রুপ সংসার  তাই সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিবার ভিত্তিক হলেই সংসার বা সমাজ তথা দেশের উন্নয়ন হবে। এই প্রেক্ষিতে পারিবারিকতাই এখন সবচেয়ে বড় সম্পদ যা দিয়ে সহজেই কাটানো যায় এই সঙ্কট মানব জীবনের প্রথম শিক্ষা আসে পরিবার থেকে যার প্রভাব বাকী জীবন বহাল থাকেআমাদের আচরণ ও চরিত্রের উপর পরিবারের প্রভাব ও কার্যকারিতা সর্বাধিক ও দীর্ঘস্থায়ী। মানুষের আচরণ ও দৃষ্টি ভঙ্গি পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাজের বিবর্তন সাধিত হয়। তাই যে কোন সামাজিক উন্নয়ন/পরিবর্তনের জন্য পরিবার ভিত্তিক উন্নয়ন/পরিবর্তন আবশ্যক। পরিবার বাচলে সমাজ বাচবে, সমাজ বাচলে দেশ বাচবে, দেশ বাচলে সভ্যতা বাচবে। 

No comments:

Post a Comment