Sunday, June 5, 2011

প্রতিবন্ধী হিসাবে কেন আমার একটি আলাদা আইনী কাঠামো দরকার?


আমি প্রথমেই মানুষ, আগে প্রতিবন্ধী নয়, তাই মানব সন্তান হিসাবে আমার মানবাধিকার আছে। আমার মানবাধিকার নিশ্চিত হলে প্রতিবন্ধিতার কারণে অধিকার রক্ষার জন্য আলাদা ভাবে কোন আইনী কাঠামোর প্রয়োজন পরেনা। অধিকার কেউ কাউকে দেবার কোন বিষয় নয়, এটা অর্জন করে নিতে হয়। প্রতিবন্ধিতা ব্যক্তির দেহ-মনে নয় এবং প্রতিবন্ধীতা কোন ব্যক্তি সংক্রান্ত বিষয়ও নয়। এটা প্রচলিত সমাজ কাঠামোর সৃষ্ট। সমভাবে মানবাধিকার অধিকার অর্জনের অধিকার থেকে সমাজের প্রচলিত ব্যবস'া ও পরিকাঠামোর কারণে কোন যোক্তিক কারণ ছাড়া ক্রমাগত বঞ্চনাই প্রতিবন্ধিতা। এটা সামাজিক মডেলের প্রধান স্বীকার্যও। আর এজন্যই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগনের অধিকার রক্ষায় একটি আলাদা সনদের প্রয়োজন। সামাজিক মডেলের সবোৎকৃষ্ট উৎপাদন জাতিসংঘ প্রতিবন্ধী অধিকার সনদ। একটি আন্তর্জাতিক সনদ একটি আইনও বটে এবং এটা এখন পর্যন্ত মানবজ্ঞানে অর্জিত সর্বােৎকৃষ্ট মানবাধিকার দলিল বলে জ্ঞানীমহলে প্রতিষ্ঠিত তত্ত্ব ও সত্য।

মানবাধিকার বলতে আমি বুঝি মানব সন্তান হিসাবে জন্ম নেয়ার সাথে সাথে;
১. পৃথিবীর সমস্ত প্রাকৃতিক সম্পদের উপর সমঅধিকার,
২. পৃথিবীর সমস্ত সামাজিক সম্পদের উপর সমঅধিকার; এবং
৩. পৃথিবীর এ যাবত অর্জিত মানবজ্ঞানে সমঅধিকার।

এই দৃষ্টিভভিঙ্গিতে জাতি সংঘ প্রতিবন্ধী অধিকার সনদ একটি উৎকৃষ্টমানের সাহিত্য কর্ম, ক্ল্যাসিক পর্যাায়ের। কিন্তু এটা প্রয়োগ ও চর্চাযোগ্য কোন কার্যকর ঞঙঙখ নয় যা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগনের জীবনে কাঙ্খিত ও প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে পারে এই অধিকারসমুহ তথা মানবাধিকার উপভোগে। প্রয়োগ ও চর্চা বিহীন আইন কিছু জ্ঞানী-জ্ঞানী বাক্যের সমাহার মাত্র। আইন যাদের জন্য যে উদ্দেশ্যে প্রনীত তারা যদি সেই আইনের ফল উপলব্ধি ও উপভোগ না করতে পারে তাহলে তাকে আইন বলা আইন সম্মত হলেও জ্ঞানীদের পাঠ্য বা গবেষণার বিষয় বলাই ভাল। তবে এই মহান সাহিত্য কর্মটি শোষনের ঐতিহ্য বজায় রাখতে সক্ষম এবং জ্ঞানীদের জন্য সহজেই শোষকে রুপান্তরিত হতে কখনো ‘আইকা’, আবার কখনো ‘গ্রীজ’ হিসাবে ব্যবহারের ফজিলত অসীম ও শোষকের অফুরন্ত নব ও উন্নততর সংস্করন তৈরীতে এর বীর্য অতি উৎকৃষ্টমানের।

No comments:

Post a Comment