Sunday, June 5, 2011

মাথা উঁচু করে বাঁচুক ইশারা ভাষী মানুষ.......


বাংলা ইশারা ভাষার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি
প্রকৃতির সেরা সৃষ্টি হলো মানুষ, আর মানুষের সেরা সৃষ্টি হল তার নিজের ভাষা। একথা হলপ করে বলা যায় ভাষা পৃথিবীতে কোন ওহি নাজেলের মাধ্যমে আবির্ভূত হয়নি বরং তা মানুষের প্রয়োজনে মানুষের দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে এবং এই মানুষের দ্বারাই এর বিকাশ ঘটেছে। ভাষার ব্যবহার মানব সভ্যতার বিশাল এক বুদ্ধিবৃত্তিক জয়, ভাষাই মানুষকে অন্য প্রাণীদের হতে আলাদা করেছে। ভাষা আবিস্কার হয়েছিল বলেই মানব জ্ঞান কালান্তরে সঞ্চালিত হয়ে বর্তমানেও বর্তমান। মানব সভ্যতার সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে ‘মানব জ্ঞান’ যা ভাষার মাধ্যমেই চলমান ও জীবন্ত। ভাষা হচ্ছে জীবনের জীবন্ত ছবি যার প্রকাশ শব্দ বা ইশারায়। শব্দই একমাত্র কথা বলার উপায় নয়, আর মানুষ উচ্চারিত সব শব্দই কথা নয়। যে শব্দ কানের সদর থেকে মনের অন্দরে প্রবেশ  করে অনুভূতির পর্দায় দৃশ্যকল্পের অনুরনণ তুলতে  পারে তাই কথা। যে জন যে ভাষা জানে না, সেই ভাষায় কথা তার কাছে শব্দ ছাড়া আর কিছুই নয়। অভ্যাসজনিত কারনে বা অবচেতনভাবেই আমরা প্রায় সকলেই প্রাত্যহিক জীবনে অসংখ্য ইশারা বা সংকেত ব্যবহার করি ভাব প্রকাশের মাধ্যম হিসাবে। কিন' কেবল মাত্র সংকেত বা ইশারার মাধ্যমেই যে একটা সয়ংসম্পূর্ন ভাষা হতে পারে যা দ্বারা পরিপূর্ন ভাবে মনের ভাব প্রকাশ করা যায় এটা আমাদের অনেকেরই অজানা। পৃথিবীতে প্রায় প্রতি লাখে দেশ ভেদে তিরিশ থেকে সত্তুর জন লোক বাক প্রতিবন্ধি এবং তারা ইশারা ভাষার মাধ্যমে কথা বলে।

ইশারা কি ভাষা? শব্দ ছাড়া কি ভাষা হয়? ক’জনাই বা কথা বলে ওভাবে? ওরা তো বোবা, বধির! ‘বোবার কোন শত্রু নেই’-এমন অনেক প্রবাদও চালু আছে আমাদের সমাজে। আমাদের মনোজগতেও দখল করে আছে এই ভাবনা আর বিশ্বাস। ফলে যে জ্ঞানের বলে আমরা আলাপচারিতা জমিয়ে তুলি, বর্ননা করি, ব্যাখ্যা দেই, তার প্রাথমিক অনুমানই হলো শব্দ, শব্দ ছাড়া ভাষা হয়না। এমন কি জ্ঞান-লাভের প্রাথমিক পর্বে আমরা যখন ভাষার সংজ্ঞা শিখেছি, তাতেই বলা হয়েছে ‘অর্থবোধক শব্দের’ আবশ্যকতার কথা। ভাষা বিষয়ে জ্ঞানের এই প্রতিষ্ঠিত বলয়ের বাইরের জগত নিয়ে আজকের কথা। এই ভাষার নাম ইশারা ভাষা। ইশারা নিজেই একটি ভাষা। সবচেয়ে আদি ভাষা বোধ করি। আজকে দুনিয়ায় তবে কেন এই ভাষার কথা উঠছে? মজার ব্যাপার হলো:ফরাসী ইশারা ভাষা, ব্রিটিশ ইশারা ভাষা, আমেরিকান ইশারা ভাষা-এগুলো রীতিমত রাষ্ট্র-স্বীকৃত ভাষা। আমেরিকায় ইশারা ভাষা তো সেদেশে চতুর্থ বহুল-ব্যবহৃত ভাষা! চমকে উঠবার মতোই তথ্য বটে, শুধু তাই নয় আমেরিকার সাউথ ডাকোটায় গড়ে উঠার ইন্তেজাম শেষ হয়েছে ইশারাভাষীদের জন্য সয়ংসম্পূর্ন আলাদা একটি শহর। বাংলায়ও ইশারা ভাষা আছে। আছে এর বর্নমালা, অর্থবোধক ইশারামালা আর ব্যবহারবিধি। শিখে ব্যবহার করতে পারেন যে কেউই। পশ্চিমের অনেক দেশেইে, বিশেষ করে, আমেরিকা ও কানাডাতে আমরা বাংলাদেশে যাদেরকে আইনী ভাষায় ‘মূক ও বধির’ কিংবা যত্ন করে ‘বাক ও শ্রবন প্রতিবন্ধি’ বলি, তাদের রয়েছে শক্তিশালী সংগঠন ও এর সামাজিক প্রতিফলন এবং জাতীয় উন্নয়নে সমঅংশীদারিত্ব। প্রতিবন্ধি যদি হয় পারা-না-পারার মানে, সেই হিসাবে এঁরা নিজেদের গড়পড়তায় ‘প্রতিবন্ধি’ মানতে রাজি নন। তাঁদের দাবি, তারা অন্য যে কোন মানুষের মতোই সকল কাজ করতে সক্ষম। স ্বাবলম্বীভাবেই। তাঁদের রয়েছে একটি নিজস্ব শক্তিশালী ভাষা। ইশারা ভাষা। মুশকিল হলো ভাষাটি অন্যরা জানেনা। জানতে চেষ্টাও করেনা। অথচ ইশারা ভাষার ইতিহাস মোটেও নতুন নয়। ইশারা ভাষার জন্ম ও বেড়ে ওঠা মুলত ফ্রান্সে, যদিও বিচ্ছিন্ন ভাবে পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলেও সীমিত আকারে ইশারা ভাষার ব্যাবহার ছিল। এই ভাষার উন্নয়ন ও অস্তিত্বে জন্য একক কৃতিত্বের দাবিদার ফ্রান্সের অননব ঝরপধৎফ ১৭৫৫ সালে প্যারিসে ইশারাভাষীদের জন্য অননব ফব খ'ঊঢ়বব নামে প্রথম কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স'াপন করে এ ভাষার উন্নয়নের প্রাতিষ্ঠানিক সূচনা করেন। কিন' আজ পর্যন্ত এই ভাষাকে উন্নয়নের মূল স্রোতে ভাবা হয়নি ফলে এই ভাষার নেই কোন স্বীকৃতি। তারা একটি ক্ষুদ্রভাষাগোষ্ঠী (ষরহমঁরংঃরপ সরহড়ৎরঃু) তাঁদের দাবি, পৃথিবীর তাবৎ ক্ষুদ্র ভাষাগোষ্ঠির মতোই তারা অবহেলিত এবং সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বৈষম্যেও শিকার। তবে খুশির বিষয় হল, আমেরিকা, বৃটেন, ফ্রন্সসহ অনেক দেশেই এই ইশারা ভাষার স্বীকৃতি রয়েছে। বর্তমানে আমেরিকায় ব্যবহৃত ইশারা ভাষা উনিশ শতকের গোড়ার দিকে তখনকার ফ্রেন্স ও আমেরিকান ইশারা ভাষার সমন্বয়ে তৈরী করা হয় যা বর্তমানে পৃথিবীতে সবচেয়ে সুসংগঠিত ইশারা ভাষা। উন্নয়নশীল বিশ্বেরও অনেক দেশেই রয়েছে এই ভাষার মর্যাদা। রাষ্ট্রীয় এই স্বীকৃতির সাথে সম্পর্ক মানুষের মর্যাদার। মানুষের স্বাতন্ত্র আর ভিন্নতার তথা মানব বৈচিত্রের স্বীকৃতি। চিকিৎসাবিদ্যার জ্ঞান যাদেরকে  ‘বাক ও শ্রবন প্রতিবন্ধি’ বলে এবং যারা যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ইশারা ব্যবহার করেন, তারাই মুলত নি:শব্দ এই ভাষার ব্যবহারকারী বা ইশারাভাষি। পন্ডিত দাইসাকু ইকেদা প্রভাবিত বৌদ্ধ দর্শনের আধুনিক সোকা গাকাই ঘরানার বক্তব্য হল, এদেরকে গড়পড়তায় প্রতিবন্ধি মানুষের কাতারে দাড় করিয়ে দেয়া অন্যায়। এর পূর্ব অনুমান হল, ‘এরা কথা বলতে পারেনা’। কথা মানে শব্দ-ঠিক এই মত সত্য ধরে নিয়ে শব্দ দিয়ে কথা বলা মানুষেরা এক জুলুমের রাজত্ব কায়েম করেছে। এই রাজ্যে শব্দহীন ভাষার নাই কোন স'ান। কম-সংখ্যক মানুষের বলা ভাষার মূল্য নেই। শব্দের আর সংখ্যার এই আধিপত্য বলে দিয়েছে বিষয়টা ঠিক স্বাভাবিক নয়। আধিপতির ভাষাই এমন। অধিপতি সাদা মানুষও একদা ঘোষনা করেছিল যে কালো মানুষ স্বাভাবিক নয়। পুরুষ ঘোষনা করেছিল নারীরা মানুষ হলেণও অসম্পূর্ন। এবং যা কিছু বেশীর ভাগ মানুষ করে, সেই সমাজের সংস্কৃতিতে তা-ই স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। স্বাভাবিকতার মান দণ্ড তাই ঠিক করে দিয়েছে শব্দভাষী সংখ্যাগুরুর দল। এর ফলে দেখা যাবে , বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আদিবাসী জনগোষ্ঠীরা এককটি ক্ষুদ্র ভাষাগোষ্ঠী হলেও তাদের মাতৃ ভাষার ব্যবহার বিকশিত হবার সকল দ্বার রুদ্ধ। সরকারী ভাবে এদেশে ইশারা ভাষার স্কুল আছে। তবে স্কুলগুলোর নাম ‘মুক ও বধির’ বিদ্যালয়। লোকালয়ে বলে ‘বোবা স্কুল’।

বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষনা ইনস্টিটিউট প্রতিবন্ধিতা নিয়ে কর্মরত বেসরকারী সংগঠন সেন্টার ফর ডিজএবিলিটি এন্ড ডেভলপমেন্ট (সিডিডি) আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস'া একশন এইড ও ক্রিষ্টোফেল ব্লাইন্ড মিশন এর সহযোঘীতায় ইশারায় বাংলা ভাষা তৈরীর কাজ করে। ইনস্টিটিউটের প্রয়াত শিক্ষক ড. নিরাফাত আনাম এই কাজের নেতৃত্ব দেন। সারা দেশের শিক্ষিত, স্বল্পশিক্ষিত ও নিরক্ষর ইশারাভাষী ব্যক্তি, ইশারা ভাষার প্রশিক্ষক, বিশেষ শিক্ষা গবেষক, উন্নয়নকর্মী মিলে একটানা সাত বছর কাজ করে শব্দমালা তৈরী করা হয়। এর আগে কাজ চালাবার মতো কিছু বাংলা ইশারা শব্দমালা তৈরী করে দিয়েছিল জাতীয় বধির সংঘ। তা দিয়ে সম্পূন্র্‌ ভাষা হয়না।

এখন কি করতে হবে? ইতোমধ্যেই তৈরী এই কারিকুলামকে সরকারী কারিকুলামে পরিণত করা দরকার। স্কুলগুলোর জন্য। কিংবা সরকারী বিদ্যালয়গুলোতে যাকিছুই ভাষার ভান্ডার আছে, তার সহযোগী কারিকুলাম হতে পারে এই কাজটি। সরকারী ‘মুক ও বধির’ বিদ্যালয়সমুহের নাম পরিবর্তন করে ‘ইশারা ভাষার/ইশারাভাষীদের স্কুল’ করা দরকার। এতে সমাজে এরা ‘ভাষাহীন’ বা ‘নির্বাক’ হিসাবে পরিচিত না হয়ে ভাষাভাষি মানুষ হিসাবে পরিচিত হতে পারবে। দুর হতে শুরু করবে এদের প্রতি আরোপিত ভুল ধারণা। ইশারাভাষীদের একটি স্বতন্ত্র ভাষাগোষ্ঠী হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া দরকার। এই ভাষার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে সামাজিক আন্দোলন সৃষ্টি করতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির ভ'মিকা রাখার অবারিত সূযোগ রয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে এই সামাজিক আন্দোলনের বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারে ইউনেস্কো। এই জনগোষ্ঠীর কাছে তথ্যের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করা দরকার যাতে মানব জ্ঞানে সকলের সমঅধিকারের সূযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলেই তারা উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় আত্নমর্যাদাশীল মানুষ হিসাবে নিজেকে তুলে ধরতে পারবে।। গনমাধ্যম, বিশেষ করে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ভ'মিকা বেশী গুরুত্বপূর্ন। তথ্য মাধ্যমে এই জনগোষ্ঠী সম্পর্কে ইতিবাচক ভাবমুর্তি পরিবেশন জরুরী। এদের সম্পর্কে গৎবাধা, ভুল ধারণাগুলি দুর করা দরকার। প্রকৃত অর্থে ইশারাভাষী মানুষদের মূল প্রতিপক্ষ শব্দভাষী মানুষদের চেতনায় গ্রনি'ত ভুল উপলব্ধি। ইশারাভাষী মানুষদের সম্পর্কে শব্দভাষী মানুষদের সঠিক আত্নউপলব্ধির অভাব সভ্যতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে।  সমপ্রতি বাংলাদেশ জাতিসংঘের প্রতিবন্ধি জনগোষ্ঠীর অধিকার সনদে অনুস্বাক্ষর করেছে। প্রতিবন্ধি জনগোষ্ঠীর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন এটি। গত ৩ মে ২০০৮ থেকে এটি কার্যকর হয়েছে। আমাদের জন্য এই সনদ এখন আইনী বাধ্যবাধকতা। সনদে বাচনিক ও ইশারা ভাষাসহ অবাচনিক সকল ভাষাকেই ভাষার স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। এই স্বীকৃতি মানব পরিবারের এক ক্ষুদ্র ভাষাভাষি গোষ্ঠীর প্রতি মর্যাদা প্রদর্শন।

এরই মধ্যে বায়োনিক ইয়ার বা ককলিয়ার ট্রান্সপ্লান্ট আবিস্কার হয়েছে। ইশারা ভাষার মানুষের অস্তিত্বের জন্য এটি একটি বড় ঘটনা। এই আবিস্কারের মূখোমুখি অবস'ান ইশারা ভাষার। বিজ্ঞানের সাথে সামাজিক দর্শনের দ্বন্দ্ব। প্রতিপক্ষ বিজ্ঞান? ডেফ লাইফ নামে খুব জনপ্রিয় ম্যাগাজিন একবার এক জড়িপ চালাল। ইশারাভাষী মানুষদের কাছে জানতে চাওয়া হল তারা শুনতে চান কি-না।আশি শতাংশ মানুষের জবাব ছিল ‘না’। জানতে চাওয়া হল, তারা ককলিয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করতে চান কি-না। দশ জনে আটজন জবাব দিল ‘না’। শব্দের কোন অর্থই নেই তাদের জীবনে। কেন শুনতে পারা দরকার, তাই ভেবেই তারা বিস্ময় প্রকাশ করলেন। এটা ইশারাভাষী পরিচয় নিয়ে সম্মানের সাথে বাস করা মানুষদের মতামত। তাদের অভীজ্ঞতা হল:শব্দ দিয়ে কথা-বলা মানুষেরা ভীষন অসহিষ্ণু! অন্তত তাদের বেলায়। তাই ঐ দলে নাম লেখানোয় এত অনীহা।

এই দেশের অগ্নি সন্তানেরা নিজের ভাষায় কথা বলবার অধিকার পাবার জন্য লড়ে ইতিহাস গড়েছে। আবার এই দেশেই ভাষাগত ভাবে সংখ্যালঘু মানুষেরা এখনও তাদের নিজের ভাষায় লেখাপড়া করতে পারেনা। আর ইশারাভাষীদের সমস্যা তো আরেক ধাপ প্রকট। ইশারা নামের এই ভাষাটির কোন প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি নাই। একটি স্বতন্ত্র ভাষাগোষ্ঠী হিসাবে অধিকারের দাবি-দাওয়া তো আরো পরের কথা। শব্দভাষীদের গড়া কোন প্রতিষ্ঠানে এদের প্রয়োজন উপেক্ষিত, এরা অবাঞ্চিত। উপেক্ষা, বঞ্চনা আর শব্দভাষী প্রভূর হাতে এক অদৃশ্য দাসত্বের পিঞ্জরে করুনার জিঞ্জিরে বাধা পড়ে আছে এই মানুষদের জীবন। বিপরীতে সন্দেহের ভ্রুকুটি, স্বীকৃতি দেবার প্রতাপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে শব্দে কথা-বলা মানুষের দল, তাদের দাপুটে প্রতিষ্ঠান ও পরিবেশ। পাশে দাঁড়িয়ে আমরা ইশারাভাষী জনগোষ্ঠীর জীবনের প্রতিবন্ধকতা, সামাজিক দূর্ভোগ ও বৈষম্যের অবসান চাই। চাই পৃথিবীর সকল রস, রূপ, গন্ধে সকল মানুষের সমান অধিকার। মানুষের শারিরীক, ভাষাগত, সাংস্কৃতিক ভিন্নতার বৈচিত্র নিয়ে একটি সুন্দর পৃথিবী চাই। ইশারাভাষী মানুষের মনের কথা জানুক শব্দভাষী মানুষেরা। শব্দের দাপটে গড়ে ওঠা ভাষাভিত্তিক জ্ঞানের অসারতা ঘুচে যাক শব্দহীন ভাষার আলোকবর্তিকায়। আসুন সকলে মিলে ইশারভাষী মানুষের জন্য একটি অনুকুল পরিবেশ গড়ে তুলি। যাতে কোন মানুষের বিকাশে ‘শব্দভাষা’ বৈষম্যের দেয়াল না হয়ে দাাঁড়ায়। যেন করুনার শিকার না হতে হয় তাদের। আজ ও আগামীর সকল ভাষাভাষী যেন সমান অধিকার ও মর্যাদা পায়। মানুষের মাথা উঁচু করে বাঁচার স্বপ্ন পূরনে রাষ্ট্র এগিয়ে আসবে নিশ্চই। এটাই তো ছিল মহান সংবিধানের ১৯(১) অনুচ্ছেদের অঙ্গিকার-“সকল নাগরিকের জন্য সূযোগের সমতা নিশ্চিত করিতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হইবেন”।


No comments:

Post a Comment